সংবাদ শিরোনাম ::
ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম কমলের অবৈধ সম্পদের পাহাড় (পর্ব ২)
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময় : ০৭:৪৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৩ ৪৬৭৩ বার পড়া হয়েছে
এম.ডি.এন.মাইকেলঃ
গত ২০শে জানুয়ারি ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম কমলের অবৈধ সম্পদের পাহাড় শিরোনাম জাতীয় দৈনিক বর্তমান কথা পত্রিকার প্রথম পাতায় সংবাদ প্রকাশিত হয় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম কমল। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে তিনি তার অফিসের সহকর্মীদের অহমিকার সাথে বলে বেড়ান যে আমি কামরুল ইসলাম কমল সামান্য একজন দর্জির ছেলে হয়ে আজ জিরো থেকে হিরো হয়েছি আর এ-ই দেশে টাকা থাকলে সব কিছু করা যায় আমি আমার ঊর্ধ্বতন মহলের সবাইকে ম্যানেজ করে আজও আমার পদে বহাল আছি তাই সংবাদিকরা আমার অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশিত করে আমার কিছুই করতে পারবে না। এ-ই দিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনায়েত নগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কয়েকজন কর্মচারী আক্ষেপের সাথে বলেন যে এত অন্যায় অনিয়ম দুর্নীতি করার পরেও কামরুল ইসলাম কমল এখনো বহাল তবিয়তে দাপট এর সাথে চাকরি করছেন তার খুটির জোর কোথায়?
নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার পঞ্চবটি এনায়েত নগর ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম কমল অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠলেও তিনি এখনও আছেন বহাল তবিয়তে। পঞ্চবটি এনায়েত নগর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম কমলের এই সকল অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে জানতে ফতুল্লা উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার মোঃ সাজাদ হোসাইন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন অভিযোগ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।এই প্রতিবেদকের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ফতুল্লা উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার মোঃ সাজাদ হোসাইন বলেন বর্তমানে সারা বাংলাদেশের ডিজিটাল পদ্ধতিতে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় কিন্তু কেউ যদি কলম দিয়ে লিখে দাখিলা মিউটিশন ও তদন্তের নাম করে গ্রাহকদের হয়রানি করে কোন প্রকার লেনদেন গ্রহণ করার অভিযোগ পাওয়া তদন্ত করে সেই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।দৈনিক বর্তমান কথা পত্রিকার অনুসন্ধানকালে জানা যায় কামরুল ইসলাম (কমল) ১৯৮৫ সালে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসাবে চাকুরিতে যোগদান করেন। তখন তার সর্বসাকুল্যে বেতন ছিল দুই থেকে আড়াইহাজার টাকা।তার এ-ই চাকরি কালিন সময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় কর্মরত ছিলেন।তার গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের চর গোয়ালদি গ্রামে।বাবা সাহাব উদ্দিন ছিলেন টেইলার্স মাস্টার ও একটি ছোট টেইলার্সের দোকান। আরেক ভাই মোক্তার হোসেন তিনিও ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ শহরে কর্মরত আছেন তাকেও চাকরি দিয়েছেন বড় ভাই কামরুল ইসলাম কমল। নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড ভূমি পল্লীতে ১০ শতাংশ জমির ওপর ৬ তলা আলিশান ভবন এবং এই আলিশান ভবনের জমির মালিকানা রয়েছে তার স্ত্রী তাসলিমা আক্তার গং নামে , জমি ও ভবন সহ তৈরি করতে প্রায় ৮ কোটি টাকার দরকার। ভূমি পল্লীর ৭ নং রোডের মেইন গেটের দক্ষিণ পাশে গেইটের সাথে চিটাগাংরোড টু নারায়ণগঞ্জ প্রধান সড়কের পাশে ১০ শতাংশের প্লট।যার মূল্য প্রায় ৩ থেকে তিন- চার কোটি টাকা।গ্রামের বাড়িতে গড়েছেন দুই তলা ডুপ্লেক্স ভবন।জানাযায় ভূমি পল্লীতে আরো দুই টি প্লাট ছাড়া ও রয়েছে স্ত্রী সন্তানের নামে-বেনামে করেছে সম্পত্তি ও কোটি কোটি টাকার এফডিআর। কামরুল ইসলাম কমল এর জন্মস্থান নিজ গ্রাম ও এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানাযায় টেইলার্সের দোকান দারি করতেন বাবা সাহাব উদ্দিন,কিছু জমি আছে দাদার আমলের,সেই গুলো এখনো সেই ভাবে আছে। আর ভাই বোনের মধ্যে সবার বড় কামরুল ইসলাম কমল,ভাই বোনদের লেখা পড়া করানো এবং সংসার চালানোর আর্থিক জোগান দিতেই হিমশিম খেতে হতো তার বাবা সাহাব উদ্দিন কে,আর্থিক অভাব অনটনের মধ্যেই পরিবারের হাল ধরেন তিনি। চাকুরীতে যোগদানের ১ বছরের মধ্যেই অবৈধ উপায় অর্থ রোজগারের নেশায় পেয়ে বসে কামরুল ইসলাম কমল কে আর সেই অবৈধ অর্থে দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা কামরুল ইসলাম কমল গড়ে তোলেন কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে সুরম্য প্রাসাদ বিলাসবহুল রাজ প্রাসাদ,মেজো ভাই কে ভূমি অফিসে চাকরি,ছোট ভাই কে স্কুলে চাকরি দিয়েছেন মোটা অংকের টাকা খরচ করে এবং নামে বেনামে গড়েছেন একাধিক বাড়ি।
এরমধ্যে কামরুল ইসলাম কমলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে নানা ধরনের অনিয়মের, ভূমি উন্নয়ন কর, দাখিলা, মিউটিশন, কলম দিয়ে লিখে জাল পর্চা ও তদন্তদের নাম করে সেবা প্রার্থীদের কাছ থেকে নিচ্ছেন মোটা অংকের উৎকোচ।
চাকুরীর ১ বছরের মাথায় বাবার খুরকুটার ঘর ভেঙে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরী করেন বাবার পৈত্রিক সম্পত্তিতে দুই তলা ভবন নির্মাণ করেন। দৈনিক বর্তমান কথা পত্রিকার অনুসন্ধানে আরো জানা যায় তার স্ত্রীর তাসলিমা আক্তারের নামে ব্যাংকে ৫ কোটি টাকা এফডিআর রয়েছে ও নিজের এক ছেলের ব্যবসায় ৫০ লক্ষ টাকা লগ্নি করেছেন।
এই সকল অভিযোগ এর বিষয়ে জানতে কামরুল ইসলাম কমলের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন তার গ্রামের বাড়িতে জমি বিক্রি করে বাড়ি সম্পদ করেছেন।অন্যের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন আমার চাকরি আর এক বছর আছে আর এ-ই এক বছর চাকরি না করলেও আর কিছুই হবে না সুতরাং আপনি আমার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে আমার কিছুই করতে পারবেন না তার চেয়ে ভালো হয় আপনি আমার অফিসে এসে আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন এই বলে তিনি মুঠোফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।পরবর্তীতে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।যদিও তার গ্রামের এলাকার লোকজন জানান কামরুল ইসলাম কমলের বাপ দাদার রেখে যাওয়া গ্রামের বাড়ির সব জমি সাত/আট বার বিক্রি করলেও তার একটি প্লটের টাকা হবে না। (অনুসন্ধান অব্যাহত বিস্তারিত আগামী পর্বে)