হার্টের চিকিৎসায় বাইপাস সার্জারি
- আপডেট সময় : ০৯:২৪:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪ ৫১ বার পড়া হয়েছে
★★ হৃদরোগ চিকিৎসায় রোগীর যখন ঔষধ দিয়ে আর কাজ হয় না, তখন বাইপাস সার্জারির প্রয়োজন পড়ে। হার্টের তিন বা ততোধিক রক্তনালি কিংবা বামদিকের মূল রক্তনালির গোড়া কোনো কারণে বন্ধ হয়ে গেলে হার্টের বাইপাস অপারেশনের প্রয়োজন হয়।
বয়সের কারণে বা চর্বি জমে বন্ধ হয়ে যাওয়া হার্টের রক্তনালিগুলো যদি স্টেন্ট কিংবা রিং পরিয়ে অথবা এনজিওপ্লাস্টি করে ভালো করা সম্ভব না হয়, তাহলে সিএবিজি বা বাইপাস অপারেশনই উত্তম চিকিৎসা। অনেকে আবার এই চিকিৎসা পদ্ধতি ওপেন হার্ট সার্জারি বলে থাকেন। তবে কথাটি সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ সব জটিল হৃদরোগে বাইপাস অপারেশনের প্রয়োজন হয় না।
★★★ বাইপাস ও ওপেন হার্ট সার্জারিঃ
বাইপাস অপারেশ আর ওপেন হার্ট সার্জারি কথাটি সমার্থক নয়। হার্টের ভাল্বের রোগ, রক্তনালির রোগ, হার্টের মাংসপেশির রোগ, শিশুর জন্মগত হদরোগ এসব ক্ষেত্রে ওপেন হার্ট সার্জারির প্রয়োজন হয়। আর বাইপাস সার্জারি হলো করোনারি আর্টারি বাইপাস সার্জারি (সিএবিজি সার্জারি)।
বাইপাস অপারেশন হার্ট স্পন্দিত অবস্থায় বা বিটিং হার্টে করা যায়। এটিকে অপক্যাব সার্জারি বলে। বর্তমানে উন্নত বিশ্বে হৃৎস্পন্দন বন্ধ করেই বেশিরভাগ সিএবিজি সার্জারি করা হয়। ওপেন হার্ট সার্জারিতে হার্ট পুরোপুরি থামিয়ে দেওয়া হয় এবং অপারেশনকালে হার্ট-লাং মেশিন হার্ট ও ফুসফুসের কাজ চালিয়ে নেয়।
বুকের মাঝখানে কাটা ছাড়াও বামপাশে ছোট করে কেটেও সিএবিজি অপারেশন করা যায়। এটিকে বলা হয় মিডক্যাব সার্জারি। রোবোট দিয়েও উন্নত বিশ্বে সিএবিজি সার্জারি করা হচ্ছে। ইসকেমিক হার্ট ডিজিজের চিকিৎসায় সিএবিজি সার্জারির ফল স্টেন্ট পরানোর চেয়ে ভালো এ অর্থে যে, একবার সিএবিজি করালে তা অনেক দিন স্থায়ী হয়। সেসব রক্তনালিতে সিএবিজি করা যায়, যেখানে কখনো স্টেন্ট পরানো সম্ভব নয়। এ ধরনের অপারেশনের ঝুঁকি অনেক রোগীই সামলাতে পারেন না। অনেক রোগী বিভিন্ন রোগের জটিলতার কারণে ( বার্ধক্য, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ) সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে সক্ষম হন না। এসব কিছু মাথায় রেখেই সার্জনকে এ ধরনের জটিল অপারেশন করতে হয়।
সিএবিজির জন্য রোগীর বুক কাটতে হয় এবং শরীরে বড় কাটা দাগ থাকে। এ অপারেশনটি পুরো অজ্ঞান করে করা হয়। এতে মৃত্যুঝুঁকি থাকে । এ অপারেশনে হার্টের ধমনির যেসব জায়গায় ব্লক আছে, এর পরবর্তী স্থানে আরেকটি রক্তনালি লাগিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ধমনির স্বাভাবিক গতিতে রক্তপ্রবাহ চলমান থাকে। এ নতুন রক্তনালিটি বুকের ভেতর থেকে নেওয়া হয়। আবার পায়ের মোটা শিরা বা হাতের ধমনিও এ কাজে ব্যবহার করা হয়। এ জন্য সিএবিজি অপারেশনের রোগীর পা ও হাতে কাটা দাগ থেকে যায়।
সিএবিজি বা বাইপাস সার্জারি ওই অর্থে এখন আর কোনো ভীতিকর সার্জারি নয়। উন্নত বিশ্বের মতো আমাদের দেশেও উন্নত প্রযুক্তি ও দক্ষ কার্ডিয়াক সার্জনদের সমন্বয়ে প্রতিনিয়ত এ অপারেশন করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও প্রাইভেট হাসপাতালে এই অপারেশন করা হয়।