ঢাকা ০৭:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরার ৫২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:১২:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩ ৩৪ বার পড়া হয়েছে

উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। সম্ভাব্য বিপদ সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে প্রস্তুতিও চলছে। কিন্তু অরক্ষিত রয়েছে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার ৫২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ওই তিন জেলায় দুই হাজার ১৩৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় ১৬, সাতক্ষীরায় ২৬ এবং বাগেরহাটে ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য আঘাত বা পানির চাপে এই ৫২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ক্ষতি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত বা বড় ধরনের জলোচ্ছ্বাস হলে খুলনা উপকূলে পানি ঢোকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সে রকম কিছু ঘটলে ফের এ জেলাগুলোতে সম্পদের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া গ্রামের উত্তরপাশের বাঁধের প্রায় ২৫০ মিটার ভেঙে গিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্পানে। দুই বছর ধরে ওই বাঁধসহ আশপাশের প্রায় দুই হাজার মিটার বাঁধ মেরামত করা হয়। ওই এলাকায় বাঁধে ফের ধস নেমেছে। সেখানকার তিনটি স্থানে এ মুহূর্তে ৩০০ মিটারের মতো বাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

কয়রা ও পাইকগাছার বাসিন্দারা জানান, ঘূর্ণিঝড় যদি খুলনা উপকূলে আঘাত না হানে, তারপরও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নদ-নদীতে পানির চাপ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। আর পানি বাড়লে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার ভয় আছে।

পাউবো খুলনার ডিভিশন-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহমান জানান, তার দায়িত্বের অধীনে ৩৭৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে তিন কিলোমিটার অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এবং ছয় কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

পাউবো খুলনার ডিভিশন-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম জানান, তার অধীনে কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় বেড়িবাঁধ রয়েছে ৬৩০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ৭ কিলোমিটার।

সাতক্ষীরা ডিভিশন-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহনেওয়াজ জানান, তার আওতাধীন এলাকায় ৩০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে তিন কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই বাঁধ মেরামত করা হবে। অপরদিকে, পাউবো সাতক্ষীরা ডিভিশন-১-এর অধীনে ৩৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে তিন কিলোমিটার অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

পাউবোর বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ জানান, জেলার ৩৩৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে শ্যামনগর ও মোরেলগঞ্জ উপজেলায় ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তা মেরামত করা সম্ভব হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরার ৫২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ

আপডেট সময় : ০৪:১২:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩

উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। সম্ভাব্য বিপদ সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে প্রস্তুতিও চলছে। কিন্তু অরক্ষিত রয়েছে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার ৫২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ওই তিন জেলায় দুই হাজার ১৩৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় ১৬, সাতক্ষীরায় ২৬ এবং বাগেরহাটে ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য আঘাত বা পানির চাপে এই ৫২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ক্ষতি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত বা বড় ধরনের জলোচ্ছ্বাস হলে খুলনা উপকূলে পানি ঢোকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সে রকম কিছু ঘটলে ফের এ জেলাগুলোতে সম্পদের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া গ্রামের উত্তরপাশের বাঁধের প্রায় ২৫০ মিটার ভেঙে গিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্পানে। দুই বছর ধরে ওই বাঁধসহ আশপাশের প্রায় দুই হাজার মিটার বাঁধ মেরামত করা হয়। ওই এলাকায় বাঁধে ফের ধস নেমেছে। সেখানকার তিনটি স্থানে এ মুহূর্তে ৩০০ মিটারের মতো বাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

কয়রা ও পাইকগাছার বাসিন্দারা জানান, ঘূর্ণিঝড় যদি খুলনা উপকূলে আঘাত না হানে, তারপরও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নদ-নদীতে পানির চাপ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। আর পানি বাড়লে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার ভয় আছে।

পাউবো খুলনার ডিভিশন-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহমান জানান, তার দায়িত্বের অধীনে ৩৭৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে তিন কিলোমিটার অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এবং ছয় কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

পাউবো খুলনার ডিভিশন-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম জানান, তার অধীনে কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় বেড়িবাঁধ রয়েছে ৬৩০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ৭ কিলোমিটার।

সাতক্ষীরা ডিভিশন-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহনেওয়াজ জানান, তার আওতাধীন এলাকায় ৩০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে তিন কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই বাঁধ মেরামত করা হবে। অপরদিকে, পাউবো সাতক্ষীরা ডিভিশন-১-এর অধীনে ৩৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে তিন কিলোমিটার অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

পাউবোর বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ জানান, জেলার ৩৩৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে শ্যামনগর ও মোরেলগঞ্জ উপজেলায় ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তা মেরামত করা সম্ভব হয়নি।