ঢাকা ০২:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১১ কোটি টাকা বেহাতের নেপথ্যে কে?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৫২:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ২৮৩ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক:

টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ব্যাংকের কমপক্ষে ১১ কোটি টাকা বেহাত হয়েছে। গত তিনটি অর্থ বছরের অডিট রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ব্যাংকের অবৈধ সভাপতি কুদরৎ এ এলাহি বিভিন্ন সময় বিতর্কিত হিসাব পরিচালনা করে ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা সরিয়ে নিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।সর্বশেষ অডিট রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ঠিকাদারকে ধার এবং কোর্ট খরচের নামে ৯ কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সমবায় ব্যাংকের আওতাধীন পৌর সুপার মার্কেটের দোকান বরাদ্ধ থেকে আরো কোটি টাকা অবৈধভাবে তিনি নিয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন দোকান মালিকরা। তবে, ব্যাংকের চেয়ারম্যান কুদরৎ এ এলাহি বলছেন, এগুলো চুরির মামলা। এখানে ব্যাংক জড়িত নয়। এসবের সঙ্গে তার যোগসাঝস নেই। তবে তিনি এই ব্যাংকের টাকা বেহাতের কথা অস্বীকার করেছেন

৭ বছর আগে কুদরত এ এলাহির কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও তিনি স্বপদে বহাল আছেন। মূলত, স্বপদে বহাল থেকে সমবায় ব্যাংক থেকে বিশাল অংকের টাকা তছরুপ করার উর্দেশ্য নিয়েই এ কাজ করে যাচ্ছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান কুদরত এ এলাহি। সমবায় সমিতি আইন লঙ্গন করে তার এক তরফা নয়-ছয়ের কাজে প্রতক্ষ্য এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী একটি গ্রুপ। অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে তাকে স্বপদে বহাল রাখতে কাজ করছেন সমবায় অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারাও।সংশ্লিষ্ট সূত্র মারফত জানা যায়, কুদরৎ এ এলাহি তার পরিষদকে পাশ কাটিয়ে চাচাতো বোন জামাই দিদারুল ইসলামকে দিয়ে সমবায় ব্যাংকের একটি অবৈধ ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করছেন। এ হিসাব পরিচালনা করেন কর্মচারি দিদার এবং কুদরৎ নিজে। যার হিসাব নং- ০২০০০১৮৯৫৯১০। সূত্র জানায়, গত ৫ মাসে এ হিসাব থেকে কুদরত প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। আইন লঙ্গন করে দিদারকে সই-সাবুদের ক্ষমতা দেওয়ায় লেন-দেন করতে জবাবদিহি করতে হয় না চেয়ারম্যানকে। বিষয়টি স্বীকারও করেন হিসাব রক্ষক কর্মচারী দিদার। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমাকে সই করার ক্ষমতা দিয়েছেন চেয়ারম্যান, এ বিষয়ে আপনি তার কাছ থেকে জেনে নিলে ভালো হয়।এছাড়া সর্বশেষ অডিট রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কুদরৎ সভাপতি হিসেবে সমবায় ব্যাংকের তহবিল থেকে ঠিকাদারকে হাওলাত দিয়েছেন ৬ কোটি ৮৫ হাজার ৬ শত ৩৪ টাকা। অথচ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সমবায় ব্যাংকের কাছে ৫ বছর আগের পাওনা এখনো বুঝে পায়নি। এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী বলেন, কুদরৎ সাহেব আমার ৫ বছর আগের পাওনাই দিচ্ছেন না, হাওলাত দিবেন কেন? আমার কাজের টাকা আদায়ের জন্য আমি বার বার তাগাদা দিলেও নানা টালবাহানা করছেন চেয়ারম্যান। এ ব্যাপারে আমি এরবাইরে কিছু জানি না।অডিট রিপোর্ট সূত্রে আরো জানা যায়, বিভিন্ন ভাবে মামলা পরিচালনার জন্য কুদরৎ এ এলাহি আইনজীবী খরচ হিসেবে ৩ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। এ অবিশ্বাস্য লেনদেন নিয়ে সমবায় কর্মকর্তারাও প্রশ্ন তুলেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে সমবায় ব্যাংকটির নামে একটি মামলা চলমান। যা পুরাতন দোকানদারা দায়ের করেছেন। এ মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। এর বাইরে সভাপতি নিজে স্বপদে থাকা নিয়ে আইনজীবীদের নিজের পক্ষে নিযুক্ত করেছেন। পদে থাকা নিয়ে মামলার রায়ে কুদরৎ এলাহি হেরে যান। পরে চেম্বার কোর্টে রায় স্থগিত করে এখনো স্বপথে বহাল আছেন চেয়ায়ম্যান। তার নিজের মামলার খরচ সমবায় কোনো ভাবেই বহন করবে না বলে জানান জেলা সমবায় অফিসের একজন কর্মকর্তা। তবে, তাকে পদ থেকে সরানোর বা নির্বাচন দেওয়ার কার্যত কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না সমাবয় অধিদপ্তরও।সূত্র জানায়, সমবায় ব্যাংকের নতুন নির্বাচন বা অডিট অনিয়ম বিষয়ে ব্যবস্থা না নিয়ে অধিদপ্তরের নিবন্ধক কুদরৎ এ এলাহির পক্ষেই কাজ করছেন বলে অভিযোগ অনেকের। এ বিষয়ে সমবায় নিবন্ধকের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।জেলা সমাবায় ব্যাংক একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। নিয়ম অনুযায়ী জেলা সমাবায় অফিসের অডিট অফিসার এ কাজ করে থাকেন। কিন্তু অধিদপ্তরে প্রভাব খাটিয়ে নিজের পছন্দমতো অফিসার নিয়োগ দেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান কুদরৎ। সখিপুর উপজেলা সমবায় অফিসার বর্তমানে সমবায় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। তিনি মূলত বর্তমান চেয়ারম্যানের পরমায়েশ মেনেই কাজ কর্ম করছেন বলে জানা গেছে। তবে তিনি দাবি করেন, ব্যাংকের হিসাব পরিচালনার ক্ষেত্রে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই। সংস্থার নির্বাচন ও হিসাব পরিচালনা নিয়ে তিনি বেশী কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে বিভিন্ন মিটিংয়ের বিষয়ে বার বার বললেও চেয়ারম্যান এতে কর্ণপাত করেননি বলে জানান তিনি।কুদরৎ এর অন্য আয়ের তেমন উৎস না থাকলেও বর্তমানে অনেক সহায় সম্পতির মালিক হয়েছেন। নিজ স্ত্রীর নামে শহরের প্রাণকেন্দ্র ১৮ শতক জায়গার উপর ৫ তলা ভবন নির্মাণ করেন। স্থানীয় নির্মাণ সংস্থার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আধুনিক ফিটিংস দিয়ে বাড়িটি নির্মাণ করতে কমপক্ষে ৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এর বাইরে শহরে আরো সম্পতি কিনেছেন বলে জানা গেছে।রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েই কুদরৎ এসব করেছেন বলে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর আসনের এমপি ছানোয়ার হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, টাঙ্গাইল সমবায় ব্যাংকের অনিয়মের কথা আমাকে অনেকেই বলেছে। আমি সমবায় নিবন্ধক এবং মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, তাদের বলেছি বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। তারা কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলতে পারবো না।সমবায় ব্যাংকের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে চেয়াম্যান কুদরৎ এ এলাহি এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার ব্যাংকের অডিট রির্পোটের ব্যাপারে আপনাকে কেন বলবো, এটা দেখবে অধিদপ্তর। সাংবাদিকের কোন বিষয় না। মামলার খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে ৮৩টি মামলা হয়েছে। তাই আমাদের সকল বিষয় বিচারাধীন হওয়ায় আমি আপনাকে আর কিছু বলতে পারবো না।জানাগেছে, ব্যবসায়ীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন সমাজ কর্মী ও ব্যুরো বাংলাদেশ এর নির্বাহী রাহেলা জাকির। তিনি বলেন, সমবায় ব্যাংক এবং চেয়ারম্যানের পদে থাকা নিয়ে মাত্র ৩টি মামলা আছে। যেগুলো পরিচালনা করার ‘পাওয়ার’ আমাকে দেওয়া হয়েছে। আমি একা বড় এই সিন্ডিকেট এর বিরুদ্ধে কাজ করছি, বঞ্চিত ব্যবসায়ীদের পক্ষে। যে মামলাগুলোর ব্যাপারে সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান কুদরৎ এ এলাহি বলছেন, এগুলো অধিকাংশই মালামাল চুরির মামলা। এখানে ব্যাংক জড়িত নয়। সবাই জানে এ ব্যাংক থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। ব্যাপারটি এখন ওপেন সিক্রেট।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

১১ কোটি টাকা বেহাতের নেপথ্যে কে?

আপডেট সময় : ০৪:৫২:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ডেস্ক:

টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ব্যাংকের কমপক্ষে ১১ কোটি টাকা বেহাত হয়েছে। গত তিনটি অর্থ বছরের অডিট রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ব্যাংকের অবৈধ সভাপতি কুদরৎ এ এলাহি বিভিন্ন সময় বিতর্কিত হিসাব পরিচালনা করে ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা সরিয়ে নিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।সর্বশেষ অডিট রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ঠিকাদারকে ধার এবং কোর্ট খরচের নামে ৯ কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সমবায় ব্যাংকের আওতাধীন পৌর সুপার মার্কেটের দোকান বরাদ্ধ থেকে আরো কোটি টাকা অবৈধভাবে তিনি নিয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন দোকান মালিকরা। তবে, ব্যাংকের চেয়ারম্যান কুদরৎ এ এলাহি বলছেন, এগুলো চুরির মামলা। এখানে ব্যাংক জড়িত নয়। এসবের সঙ্গে তার যোগসাঝস নেই। তবে তিনি এই ব্যাংকের টাকা বেহাতের কথা অস্বীকার করেছেন

৭ বছর আগে কুদরত এ এলাহির কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও তিনি স্বপদে বহাল আছেন। মূলত, স্বপদে বহাল থেকে সমবায় ব্যাংক থেকে বিশাল অংকের টাকা তছরুপ করার উর্দেশ্য নিয়েই এ কাজ করে যাচ্ছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান কুদরত এ এলাহি। সমবায় সমিতি আইন লঙ্গন করে তার এক তরফা নয়-ছয়ের কাজে প্রতক্ষ্য এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী একটি গ্রুপ। অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে তাকে স্বপদে বহাল রাখতে কাজ করছেন সমবায় অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারাও।সংশ্লিষ্ট সূত্র মারফত জানা যায়, কুদরৎ এ এলাহি তার পরিষদকে পাশ কাটিয়ে চাচাতো বোন জামাই দিদারুল ইসলামকে দিয়ে সমবায় ব্যাংকের একটি অবৈধ ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করছেন। এ হিসাব পরিচালনা করেন কর্মচারি দিদার এবং কুদরৎ নিজে। যার হিসাব নং- ০২০০০১৮৯৫৯১০। সূত্র জানায়, গত ৫ মাসে এ হিসাব থেকে কুদরত প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। আইন লঙ্গন করে দিদারকে সই-সাবুদের ক্ষমতা দেওয়ায় লেন-দেন করতে জবাবদিহি করতে হয় না চেয়ারম্যানকে। বিষয়টি স্বীকারও করেন হিসাব রক্ষক কর্মচারী দিদার। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমাকে সই করার ক্ষমতা দিয়েছেন চেয়ারম্যান, এ বিষয়ে আপনি তার কাছ থেকে জেনে নিলে ভালো হয়।এছাড়া সর্বশেষ অডিট রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কুদরৎ সভাপতি হিসেবে সমবায় ব্যাংকের তহবিল থেকে ঠিকাদারকে হাওলাত দিয়েছেন ৬ কোটি ৮৫ হাজার ৬ শত ৩৪ টাকা। অথচ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সমবায় ব্যাংকের কাছে ৫ বছর আগের পাওনা এখনো বুঝে পায়নি। এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী বলেন, কুদরৎ সাহেব আমার ৫ বছর আগের পাওনাই দিচ্ছেন না, হাওলাত দিবেন কেন? আমার কাজের টাকা আদায়ের জন্য আমি বার বার তাগাদা দিলেও নানা টালবাহানা করছেন চেয়ারম্যান। এ ব্যাপারে আমি এরবাইরে কিছু জানি না।অডিট রিপোর্ট সূত্রে আরো জানা যায়, বিভিন্ন ভাবে মামলা পরিচালনার জন্য কুদরৎ এ এলাহি আইনজীবী খরচ হিসেবে ৩ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। এ অবিশ্বাস্য লেনদেন নিয়ে সমবায় কর্মকর্তারাও প্রশ্ন তুলেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে সমবায় ব্যাংকটির নামে একটি মামলা চলমান। যা পুরাতন দোকানদারা দায়ের করেছেন। এ মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। এর বাইরে সভাপতি নিজে স্বপদে থাকা নিয়ে আইনজীবীদের নিজের পক্ষে নিযুক্ত করেছেন। পদে থাকা নিয়ে মামলার রায়ে কুদরৎ এলাহি হেরে যান। পরে চেম্বার কোর্টে রায় স্থগিত করে এখনো স্বপথে বহাল আছেন চেয়ায়ম্যান। তার নিজের মামলার খরচ সমবায় কোনো ভাবেই বহন করবে না বলে জানান জেলা সমবায় অফিসের একজন কর্মকর্তা। তবে, তাকে পদ থেকে সরানোর বা নির্বাচন দেওয়ার কার্যত কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না সমাবয় অধিদপ্তরও।সূত্র জানায়, সমবায় ব্যাংকের নতুন নির্বাচন বা অডিট অনিয়ম বিষয়ে ব্যবস্থা না নিয়ে অধিদপ্তরের নিবন্ধক কুদরৎ এ এলাহির পক্ষেই কাজ করছেন বলে অভিযোগ অনেকের। এ বিষয়ে সমবায় নিবন্ধকের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।জেলা সমাবায় ব্যাংক একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। নিয়ম অনুযায়ী জেলা সমাবায় অফিসের অডিট অফিসার এ কাজ করে থাকেন। কিন্তু অধিদপ্তরে প্রভাব খাটিয়ে নিজের পছন্দমতো অফিসার নিয়োগ দেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান কুদরৎ। সখিপুর উপজেলা সমবায় অফিসার বর্তমানে সমবায় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। তিনি মূলত বর্তমান চেয়ারম্যানের পরমায়েশ মেনেই কাজ কর্ম করছেন বলে জানা গেছে। তবে তিনি দাবি করেন, ব্যাংকের হিসাব পরিচালনার ক্ষেত্রে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই। সংস্থার নির্বাচন ও হিসাব পরিচালনা নিয়ে তিনি বেশী কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে বিভিন্ন মিটিংয়ের বিষয়ে বার বার বললেও চেয়ারম্যান এতে কর্ণপাত করেননি বলে জানান তিনি।কুদরৎ এর অন্য আয়ের তেমন উৎস না থাকলেও বর্তমানে অনেক সহায় সম্পতির মালিক হয়েছেন। নিজ স্ত্রীর নামে শহরের প্রাণকেন্দ্র ১৮ শতক জায়গার উপর ৫ তলা ভবন নির্মাণ করেন। স্থানীয় নির্মাণ সংস্থার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আধুনিক ফিটিংস দিয়ে বাড়িটি নির্মাণ করতে কমপক্ষে ৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এর বাইরে শহরে আরো সম্পতি কিনেছেন বলে জানা গেছে।রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েই কুদরৎ এসব করেছেন বলে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর আসনের এমপি ছানোয়ার হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, টাঙ্গাইল সমবায় ব্যাংকের অনিয়মের কথা আমাকে অনেকেই বলেছে। আমি সমবায় নিবন্ধক এবং মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, তাদের বলেছি বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। তারা কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলতে পারবো না।সমবায় ব্যাংকের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে চেয়াম্যান কুদরৎ এ এলাহি এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার ব্যাংকের অডিট রির্পোটের ব্যাপারে আপনাকে কেন বলবো, এটা দেখবে অধিদপ্তর। সাংবাদিকের কোন বিষয় না। মামলার খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে ৮৩টি মামলা হয়েছে। তাই আমাদের সকল বিষয় বিচারাধীন হওয়ায় আমি আপনাকে আর কিছু বলতে পারবো না।জানাগেছে, ব্যবসায়ীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন সমাজ কর্মী ও ব্যুরো বাংলাদেশ এর নির্বাহী রাহেলা জাকির। তিনি বলেন, সমবায় ব্যাংক এবং চেয়ারম্যানের পদে থাকা নিয়ে মাত্র ৩টি মামলা আছে। যেগুলো পরিচালনা করার ‘পাওয়ার’ আমাকে দেওয়া হয়েছে। আমি একা বড় এই সিন্ডিকেট এর বিরুদ্ধে কাজ করছি, বঞ্চিত ব্যবসায়ীদের পক্ষে। যে মামলাগুলোর ব্যাপারে সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান কুদরৎ এ এলাহি বলছেন, এগুলো অধিকাংশই মালামাল চুরির মামলা। এখানে ব্যাংক জড়িত নয়। সবাই জানে এ ব্যাংক থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। ব্যাপারটি এখন ওপেন সিক্রেট।